বুদ্ধিমান পেঁচা
এক সময় জঙ্গলে বিরাট বৃক্ষে এক গুণী বৃদ্ধ প্যাঁচা বাস করত। দূর-দূরান্ত হতে পশু পাখিরা তার কাছে বিভিন্ন বিষয়ের উপদেশ নিতে আসত; কারণ সে বিচক্ষণ বুদ্ধি এবং মহাজ্ঞানী হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল।
একদিন একটি ছোট্ট পাখি সেই বৃদ্ধ প্যাঁচার নিকট তার মনবাঞ্ছনা প্রকাশ করে বলল –
“আমি অন্য পাখিদের মত অনেক উপরে উঠতে পারি না, পেঁচা মশায়; তাই আমার মন খারাপ, কিছুই ভালো লাগেনা। আপনি আমার বলে দিন – কিভাবে আমি অনেক উঁচুতে উড়তে পারবো? ”
এসব শুনে বিচক্ষণ জ্ঞানী পেঁচা ছোট্ট পক্ষী ছানাকে কাছে টেনে বললেন – তুমি আসল জিনিসটাই ভুলে যাচ্ছ বাছা, “ তুমি বাজ, তুমি শ্যেন; শ্যেন কখনো নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করে না। এর থেকেও বড় কথা – শ্যেন এর অর্থ হল – বাতাস চিরে গগন স্পর্শ করা। তাই তুমি নিজের শক্তি এবং দক্ষতাকে জানো, এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করো। সর্বোপরি নিজেকে বিশ্বাস করো – দেখবে তুমি একদিন আকাশের অনেক উপরে উড়ছো।
পাখিটি সব কিছু শুনে – প্রতিনিয়ত চর্চা শুরু করে দেয়। যখন তার কাছে ওড়া প্রায় অসম্ভব মনে হয়, তখন সে যেন নিজের প্রতি নিজেই কঠোর হয়ে ওঠে। এভাবে অতিরিক্ত সময়ে এক অসামান্য দক্ষতা অর্জন করে।
ছোট শ্যেন এখনো অনেক অনেক উঁচুতে উড়তে পারে, যা দেখে অন্য সকল পাখিরা বিস্মিত হয়ে যায় এবং ভাবে কিভাবে সম্ভব!
বয়স্ক পেচক – শ্যেন টিকে উড়তে দেখে অত্যন্ত খুশি হয় এবং ভাবে ছোট্ট পাখিটি জীবনের এক বড় মন্ত্র শিখেছে – “ কখনো হার মানতে নেই এবং কখনো ছেড়ে পালিয়ে যেতে নেই।”
নীতিকথা
মোটের ওপর কথা হলো এই যে, ব্যক্তি বিশেষে আমরা সামান্য, অসামান হতে চাইলে প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে একান্ত প্রয়াস। কঠোর পরিশ্রম, মানসিক স্থিরতা, এবং আত্মবিশ্বাস আমাদের উন্নতিকল্পে সহায়ক।।